ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে বর্তমানে যদিও পুরুষরা এগিয়ে আছেন তারপরেও আশার কথা হচ্ছে মহিলা উদ্যোক্তাদের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ফলে দেশ ও পরিবারে তারাও একটা অবদান রাখছেন। অনেক মহিলা উদ্যোক্তাই কোন ব্যবসায়িক উদ্যোক্ত নেওয়ার পরেও মনে করেন, তারা হয়তো বা আর বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারবেন না।
এজন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, আপনি কোন ব্যবসায়িক পরামর্শদাতা খুঁজে বের করতে পারেন। উদ্যোক্তা কিংবা ব্যবসায়িক রিলেটেড বিভিন্ন সভা-সেমিনারে অংশ নিতে পারেন। এতে করে আপনার মনোবল বৃদ্ধি পাবে। উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে।
নিচের টিপস্গুলো আপনাকে উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করতে পারে।
১) সঠিক শিক্ষা নিনঃ উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজন অধ্যাবসায়, পরিশ্রম ও সঠিক শিক্ষা। আপনি এখনো একাডেমিক শিক্ষায় রত থাকেন কিংবা শিক্ষা শেষ করার পরেও দীর্ঘদিন কোন কিছু না করে অলস বসে থাকেন তবে আপনার পক্ষে উদ্যোক্তা হওয়া একটু কঠিনই বটে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য দৃঢ় মনোবলের পাশাপাশি সঠিক শিক্ষা নিতে হবে। এর জন্য আপনি প্রশিক্ষণ নিতে পারেন, অনলাইনে বিভিন্ন লেখা পড়তে পারেন। ইউটিউব থেকেও আপনি অনেক কিছুই শিখতে পারবেন।
২) ফান্ড খুঁজে বের করুনঃ মহিলাদের ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা থাকলেও ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে তারা কিছু বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিশেষত মহিলা মালিকাধীন সংস্থাগুলো ও বিভিন্ন ব্যাংক মহিলা উদ্যোক্তাদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকেন। যদি ব্যবসা করার মতো পর্যাপ্ত টাকা না থাকে তবে কোন বেসরকারী মহিলা সংস্থা বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও উদ্যোক্তার খাতায় নাম লেখাতে পারেন। পাশাপাশি এসব সংস্থা বিনিয়োগকারী এবং পরামর্শদাতাদের সাথে আপনাকে সংযুক্ত করতে সহায়তাও পারে।
৩) নিজের ওপর আস্থা বা বিশ্বাস রাখুনঃ উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে নিজের ওপর বিশ্বাস বা আস্থার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথমত, আপনার নিজের ব্যবসা এবং নিজেকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। অনেক মহিলাই আছেন যারা নিজেকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চায় না। বিশেষ করে যখন বাচ্চাদের যত্ন নেওয়া বা বয়স্ক পিতামাতার যত্ন নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো পালন করেন। বলছি না যে, পরিবারের প্রতি আপনার কোন দায়িত্ব নেই। পরিবারকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে তবে তার আগে নিজের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে।
এর অন্য অর্থ হ’ল আপনার প্রবৃত্তির উপর বিশ্বাস রাখা উচিত। পুরুষরা প্রায়শই আত্মবিশ্বাসের সাথে তাদের প্রবৃত্তিকে বিশ্বাস করার জন্য যখন সামাজিকীকরণ করা করে। অবশ্যই, আপনার পরামর্শ শুনে এবং ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সাবধানতার সাথে তারা এগিয়ে যায়।
নিজের ওপর এই বিশ্বাস রাখুন যে, পুরুষরা পারলে আপনি কেন পারবেন না। আপনিও পারবেন একজন উদ্যোক্তা হতে।
৪) ব্যর্থতাকে আলিঙ্গন করুনঃ উদ্যোক্তা হওয়ার আগে নিজের ভুলগুলোকে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন। কোন কারণে যদি আপনার উদ্যোক্তটি ব্যর্তও হয়ে যায় তবে আপনি এটাকে শেখার একটা প্রক্রিয়া হিসেবে ধরে নিন। আপনার ব্যবসায়ের জন্য আপনার প্রতিটি ধারণা কার্যকর নাও হতে পারে এবং আপনি মাঝে মাঝে অন্যের কাছে ছোটও হয়ে যেতে পারেন। তাই ব্যর্থ হয়ে গেলে মুষড়ে না পড়ে বা ঘাবড়ে না গিয়ে তাকে আলিঙ্গন করতে শিখুন।
৫) রোল মডেল খোঁজ করুনঃ মহিলা উদ্যোক্তাদের সম্পর্কে বিভিন্ন নিবন্ধ-প্রবন্ধ এবং বই পড়ুন। বাস্তব জীবনে যেসকল মহিলাগণ উদ্যোক্তা হয়ে সাফল্য পেয়েছেন তাদের পেছনের গল্পগুলো জানার চেষ্টা করুন। তারা কিভাবে শুরু করেছিল, কোথায় ব্যর্থ হয়েছিল, তাদের সাফল্যের পেছনে মূলমন্ত্র কি এসব জানতে সচেষ্ট হোন। আপনি যে সকল মহিলা ব্যবসায়ের মালিকের সাথে দেখা করেন তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন। মনে রাখবেন ক্ষেত্র বিশেষে পুরুষরাও আপনার ব্যবসায়ের জন্য একজন দুর্দান্ত পরামর্শদাতা হতে পারে।