শিরোনামটি আগে খেয়াল করুন। যারা ইতোমধ্যে উদ্যোক্তার খাতায় নাম লিখেছেন আজেকের লেখাটি তাদের জন্য।  আমি কিন্তু সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় বলিনি, বলেছি আরও সফল উদ্যোক্তা কিভাবে হবেন সেই বিষয়ে। কেননা আমি জানি, আপনি একজন উদ্যোক্তা এবং সফল উদ্যোক্তা। আপনি ইতোমধ্যে অনেক কিছুই জেনে গিয়েছেন, অর্জন করেছেন। কিন্তু আমি আজ আলোচনা করবো আপনার এই উদ্যোগটি কিভাবে আরও সফলতার মুখ দেখতে পারে সেটা নিয়ে। যেহেতু আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ছেন সেহেতু আমি ধরে নিতে পারি যে, আপনি আরও সফল উদ্যোক্তা হতে চান। আমরা কমবেশি সকলেই জানি যে, নিজের ব্যবসা ব্যক্তিকে আরও বেশি করে স্বাধীনতা এবং ক্ষমতায়নের একটি ধারণা দেয়। উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড়  সুবিধা হলো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা। তাদের সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গ্রাহক এবং বিক্রেতাদের সাথে একটা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলে। আর এটিই হলো আপনার ব্যবসাটি বেঁচে থাকার দুর্দান্ত উপায়। এখন জেনে নেয়া যাক আরও সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়গুলো।

১। কৌতুকপূর্ণ অভিনেতা

হ্যাঁ! সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে কৌতুকপূর্ণ অভিনেতা হতে হবে। মাঝে মধ্যে এমনও হয় যে, কৃপণতাও অধ্যবসায় হয় দাঁড়ায়। কোন কাজ শুরু করলে সেটার শেষ অবধি আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। এইযে কাজ চালিয়ে যাবার ক্ষমতা এটা সব উদ্যোক্তাদেরই থাকা উচিৎ। বর্তমান বিশ্বটাই হলো একটা উদ্যোগী বিশ্ব। সত্যিই, কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় ছাড়া আপনি উদ্যোগী বিশ্বের কোথাও যেতে পারবেন না।

২। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করা

আপনি যদি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান তবে নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে, কেউ এসে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে দিবে না। আপনি কি করবেন সেটা আপনার ওপর নির্ভর করছে। প্রতিটি চ্যালেঞ্জের কারণে একজন উদ্যোক্তা দ্রততম সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এর ফলে পরবর্তী সময়ে কি কি চ্যালেঞ্জ সমূহ আসতে পারে বা কোন কোন চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হতে পারেন সে বিষয়ে উদ্যোক্তাগণ আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারে। নিজেকে নতুন এবং কঠিন কাজগুলোর সাথে চ্যালেঞ্জ জানানো হলে আপনার অন্যান্য কাজও আরও সহজ হয়ে যায়। মনে রাখবেন একজন উদ্যোক্তা হিসাবে আপনাকে সবসময় বড় চ্যালেঞ্জের সন্ধান করতে হবে।

৩। উৎসাহী হতে হবে

কাজের প্রতি একজন উদ্যোক্তার ভালোবাসা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে কাজ করবেন সেই কাজের প্রতি যদি ভালোবাসা না থাকে তবে তা করবেন না। আমরা যতটা ভাবছি উদ্যোক্তা হওয়াটা কিন্তু অতোটা সহজ নয়। একজন উদ্যোক্তা হিসাবে আপনাকে আপনার ব্যবসায়ের জন্য দীর্ঘ সময় দিতে হবে এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আপনি যখন যাই করেন না কেন সে সম্পর্কে আপনাকে যথেষ্ট অনুরাগী হতে হবে। ফলে আপনি যদি কোন কাজে দীর্ঘ সময়ও দেন তাতে কাজের প্রতি আর কোন বিরক্তি তৈরি হবে না। উদ্যোক্তাদের তার কাজের প্রতি উৎসাহ থাকতে হবে।  একটা সময়ে যখন আপনি একজন পুরোপুরি উদ্যোক্তা হয়ে  উঠবেন তখন কাজ এমনিতেই সহজ হয়ে যায়।

৪। ঝুঁকি নেয়া

অনেই উদ্যোক্তাই আছে যারা ঝুঁকি নিতে চায় না। কিন্তু আপনি যদি উদ্যোক্তা হতে চান তবে আপনাকে ঝুঁকি নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। যারা সফল উদ্যেক্তা তারা ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। এটা তাদের কাজেরই একটা অংশ। সফল উদ্যোক্তা মাত্রই জানেন যে, কোথায়, কখন ঝুঁকি নিতে হবে এবং কোন সুযোগটি গ্রহণ করা উচিৎ, কোনটি অনুচিত। ব্যবসা শুরু করতে চান ভালো কথা, তার আগে আপনার ব্যবস্যার জন্য যে ঝুঁকি রয়েছে তা সনাক্ত করতে হবে এবং এই ঝুঁকিগুলোকে বিনা দ্বিধায় গ্রহণ করতে হবে।

৫। নিজেকে বিশ্বাস করা

আপনি যদি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান তবে সবার আগে আপনার নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে। কথাটি হয়তো হাস্যকর মনে হতে পারে। অন্যকে বিশ্বাস না করে নিজেকে কেন বিশ্বাস করতে বলছি তাই না? যেখানে সারাজীবন শুনে এসেছেন মানুষকে বিশ্বাস করতে হয় আর সেখানে আমি কিনা বলছি নিজেকে বিশ্বাস করার কথা। তবে কথা সত্য। আপনি যদি নিজেকে বিশ্বাস না করেন তবে কে করবে? একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার অর্থ হলো আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আপনার অর্জিত জ্ঞান এবং সেই জ্ঞানের উপর নির্ভর করতে শিখেছেন। নিজের উপর আস্থা রাখা ও বিশ্বাস করার ক্ষমতা আপনার আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে তুলবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যখন সহায়তা বা পরামর্শের জন্য কোথায় যাওয়া দরকার বা কোনও পরামর্শদাতার কাছে যেতে চাচ্ছেন তাতে কোনও সমস্যা নেই, তবে আপনাকে অন্যের কাছ থেকে ইনপুট না নিয়ে নিজের এবং নিজের বিচারকে বিশ্বাস করতে শিখতে হবে। তো আর দেরী কেন, নিজেকে বিশ্বাস করতে শিখুন কেননা আপনি ইতিমধ্যে উদ্যোগী উদ্যোক্তা হয়ে গিয়েছেন এবং সাফল্যের দিকে পথচলাও শুরু করে দিয়েছেন।

৬।ভয়কে জয় করা

ভয় আপনার কর্ম থামিয়ে দেয়।  আর সফল উদ্যোক্তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তারা যখন কোনও সুযোগ দেখে বা  কোন কাজে কোথাও ভুল হয় তখন তারা সেটাকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয়।

কাজ শুরু করার আগে আপনার ভয়কে কিভাবে হ্রাস করা যায় সেই উপায়গুলো আগে সন্ধান করুন তবেই আপনি অনেক বেশি সফল উদ্যোক্তা হবেন। মনে রাখবেন, ভয় আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে জড়িত। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা যত ক্রাইম টিভি/সিরিয়াল দেখে, অপরাধের আশঙ্কা তত বেশি থাকে। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে আপনার ভয়কে জয় করুন।

একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে ভয় জয় করার জন্য যে উপদেশটি আমার প্রিয় তা হল- আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর অনুশীলন করা। আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সম্পর্কে প্রতিদিন চিন্তা করা, আপনাকে, অন্যকে বা আপনার ব্যবসাকে উপকৃত করেছিল যারা তারাই তাড়াতাড়ি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং ভয় হ্রাস করতে আপনাকে সহায়তা করবে।

৭। সময় ব্যয়

আপনি কি মনে করেন যে, আপনি রাতারাতি সাফল্য পেয়ে যাবেন? আমি আপনাকে আপনার ব্যবসায় নিবিড় নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। কঠোর পরিশ্রমের পরে, সেই সমস্ত উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী যারা রাতারাতি সাফল্য লাভ করেছিল তারা তাদের কৃতিত্বের জন্য সত্যই কঠোর এবং দীর্ঘ পরিশ্রম করেছে। আপনি আপনার সময়, দিন এবং বছরগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করে দেখুন। যারা সফল হয়েছে তাদের জীবন, তারা কী শিখেছে, কিভাবে শিখছে এবং কতবার তারা ব্যর্থ হয়েছিল তা একবার ভেবে দেখুন। সফল উদ্যোক্তারা সাফল্যে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সময় নেয় এবং তাদের অনেকের পথচলার মধ্যে ব্যর্থতা পাল্লাও রয়েছে।

আপনি যদি মনে করেন সফলতা পেতে খুব বেশি সময় নিচ্ছে, সাফল্য খুব সহজে ধরা দিচ্ছে না তবে নিজেকে বিরতি দিন। কিন্তু প্লান ঠিক রাখুন, সময়ের হিসাব রাখুন এবং এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হবেন এতে কোন সন্দেহ নেই।

৮। আর্থিক পরিকল্পনা

যে কোন কাজের সূচনা করতে এবং উদ্যোক্তা হতে গেলে ব্যবসায়ের জন্য অর্থের প্রয়োজন হয়। এটি জীবনযাত্রারও একটি অংশ মাত্র। অনেক উদ্যোক্তাই আছেন যারা অর্থের সন্ধানে যথেষ্ট সময় ব্যয় করে এবং যথেষ্ট পরিকল্পনা করে না, তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি পরিকল্পনা ছাড়াই অতল গহ্বরে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। বেশিরভাগ উদ্যোক্তা তারা তাদের ব্যবসা শুরু করার জন্য নিজস্ব সঞ্চয় ব্যবহার করে থাকে। তাদেরও একটা পরিকল্পনা আছে এক্ষেত্রে অনেক সময় ঝুঁকিও কমে যায়।শুরুতে আপনার আর্থিক পরিকল্পনা করুন এবং এর সাথে লেগে থাকার চেষ্টা করুন।

৯। কারা হবেন আপনার গ্রাহক

উদ্যোগী ব্যবসায় ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম সাধারণ কারণ হ’ল গ্রাহক না থাকা। যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে একজন উদ্যোক্তাকে চিন্তা করতে হবে যে, আমি যে পণ্য নিয়ে ব্যবসা করবো কিংবা যে পণ্যটি তৈরি করবো সেই পণ্যটি কে কিনবেন বা কারা হবেন এর গ্রাহক। এটা যদি আপনি ভালোভাবে না জানেন কিংবা না জেনেই ব্যবসা শুরু করে দেন তবে সেটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। লোকসান হবে।

 যে কোন ধরনের আর্থিক পরিকল্পনা করার আগে, মূলধন বাড়ানোর আগে বা কোনও নাম বাছাই করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে এমন কোনও গ্রাহক আছেন যিনি আপনার পণ্য কিনবেন বা আপনার পরিষেবা ব্যবহার করবেন।

 ১০। অভিযোগ শুনুন

হ্যাঁ, গ্রাহকদের অভিযোগ আপনাকে মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে।এটি এমন একটি পরামর্শ যা উদ্যোক্তাদের শেখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার গ্রাহকের অভিযোগ শুনে আপনার ব্যবসায়ের দুর্বলতাগুলো সনাক্ত করতে পারেন। একজন  উদ্যোক্তা মাত্রই জানেন গ্রাহক ছাড়া কোন ব্যবসা সফল হতে পারে না। আপনার প্রচুর গ্রাহক থাকতে পারে যারা আপনার পণ্য বা পরিষেবা গ্রহণে আগ্রহী হতে কিন্তু আপনি যদি তাদের কোন অভিযোগ না শোনেন তবে অতি শীঘ্রই আপনি আর কোন গ্রাহককেও খুঁজে পাবেন না। প্রত্যেক গ্রাহকের অভিযোগ আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে, তাদের অভিযোগগুলো শ্রদ্ধার সাথে শুনতে হবে এবং সমাধান করতে হবে। একজন উদ্যোক্তাকে সর্বদা মনে রাখতে হবে, গ্রাহক কি চায়, কি বলে এবং কি জানাতে চলেছে। একজন সফল উদ্যেক্তা হলো সেই যে গ্রাহকের অভিযোগ শোনে এবং সে মতে তার ব্যবসায়ের দুর্বলতাগুলো ঠিক করে নেয়।

 ১১। আত্ম-প্রচার

‘মানুষ কি বলবে’- এই লজ্জা এবং ভয়ে অনেক উদ্যেক্তাই নিজেকে প্রচার করতে চায় না। এমনকি তাদের ব্যবসায় সম্পর্কে খুব বেশি কথাও বলতে চায় না। কিন্তু আপনি যদি আপনার ব্যবসার প্রচার না করেন তবে কে করবে। আপনার ব্যবসা বা পরিষেবা সম্পর্কে মানুষকে জানান, লিফলেট বিতরণ করুন, বিজ্ঞাপন দিন যে কোন উপায়ে আপনার ব্যবসাটি প্রচার করুন। যেনো কেউ আপনার ব্যবসার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আপনি সত্যটা দেখাতে পারেন এবং দ্রুত প্রচার করতে পারেন।

আমরা তো জানিই প্রচারেই প্রসার বাড়ে। নিজেকে প্রচারের আর একটি উপায় হলো গ্রাহকরা আপনার ব্যবসা সম্পর্কে কি বলে সেটা জেনে নেয়া। যখন কেউ জিজ্ঞেস করে আপনার ব্যবসা কিভাবে চলছে তখন আপনি তাদেরকে আপনার গ্রাহক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। ভালো কিছুর পাশাপাশি খারাপ কিছু সরবরাহ করতেও ভুলবেন না।

১২। নেটওয়ার্ক, নেটওয়ার্ক এবং নেটওয়ার্ক

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং হলো ব্যবসার ক্ষেত্রে এমন একটি সিস্টেম যা কিনা যে কোন ধরনের ব্যবসা বিকাশের ক্ষেত্রে সাহায্য করে। এটা হলো এমন একটা মাধ্যম যা একজন ব্যক্তি আর একজন ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে ব্যবসাটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। একজন উদ্যোক্তাকে কখনও নেটওয়ার্কিং বন্ধ করা উচিৎ নয়।

১৩। শিখুন এবং তৈরি করুন

একজন সফল উদ্যোক্তা মানসিকতা হ’ল শেখা এবং সৃজন করা। একজন উদ্যোক্তা হিসাবে আপনি সর্বদা নতুন তথ্য গ্রহণ করবেন এবং নতুন কিছু  তৈরি করবেন। যদি শিখতে চান তবে টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া এবং মুভি থেকে দূরে থাকুন। একান্তই যদি এসব করতে হয় তবে পরিমিতরূপে সবকিছু অনুসরণ করুন। তবে মনে রাখতে হবে সাধারণভাবে এই সব বিনোদনি উদ্যোক্তাদের জন্য সময় নষ্টকারী। সফল উদ্যোক্তা হতে হলে বিনোদনের সময় সীমাবদ্ধ করে দেয়া উচিৎ। টিভি এবং সিনেমা দেখার পরিবর্তে কেস স্টাডি পড়ুন এবং ধ্যান করুন।

১৪। বিতরণ করুন, বিক্রি করবেন না

এটা সত্য যে, কেউ বিক্রি করতে পছন্দ করে না। সুতরাং, আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করার পরিবর্তে বিতরণ করুন। তাদের বিনামূল্যে ডাকখরচ ছাড়াই অফার করুন এবং দুর্দান্ত পণ্য সরবরাহ করুন।

১৫।প্রশ্ন/জিজ্ঞাসা করুন

ধরে নিলাম যে, আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনি সবকিছুই জানেন। সুতরাং যে কোন ধরণের সাহায্য, সহযোগীতা, পরামর্শ এবং আপনার যা যা প্রয়োজন সমস্ত কিছু আপনার গ্রাহক, পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনকে জিজ্ঞাসা করুন। এইসব প্রশ্ন ও  জিজ্ঞাসার ফলে আপনি অনেক অজানা তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। মনে রাখবেন আপনার যত বেশি তথ্য থাকবে, আপনি তত বেশি সংযোগ তৈরি করতে পারবেন এবং আপনার ব্যবসা পরিচালনা সহজতর হবে।

১৬। অনুপ্রাণিত হওয়া

একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে সাধনা করতে হবে, সৃজনশীল সাধনা। একজন উদ্যোক্তা হিসাবে আপনাকে সংযোগ তৈরি করতে হবে, সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে এবং এমন নতুন জিনিস তৈরি করতে হবে যা আগে কেউ ভাবেনি। স্রষ্টা এবং সৃজনশীলদের অনুপ্রাণিত করা দরকার। সফল উদ্যোক্তারা যে বিষয়গুলিকে অনুপ্রাণিত করে তার জন্য সময় নেয়। অনুপ্রেরণা কখন, কোথা থেকে আসবে আমরা কেউ বলতে পারবো না। যা কিছু এটি আপনাকে অনুপ্রাণিত করে, তা করুন। এটি আপনার ব্যবসায়ের জন্য ভাল। সফল উদ্যোক্তারা অনুপ্রাণিত হয়। সেই যাদুটিকে খুব বেশি সময় পিছলে যেতে দেবে না।

১৭।অন্যকে সাহায্য করা

উদ্যোক্তারা সব সময় ব্যস্ত থাকেন এটা সত্য, তাই এই পরামর্শটি তাদের দিলে মাঝেমধ্যে তারা বিরক্তবোধ করে। “আমার আর কারও সাহায্য করার সময় নেই! আমি ইতোমধ্যে উদ্যোক্তা হয়ে গেছি। ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটছে এখন” অনেক উদ্যোক্তাই এমনটি ভেবে থাকেন। তারা মূলত জানে না যে, অন্যকে সাহায্য করা কতোটা অনুপ্রেরণামূলক এবং ব্যাপক উপকারী হতে পারে নিজের জন্য।  এখন প্রশ্ন হতে পারে, কেন আপনি অন্যকে সাহায্য করবেন? মনে রাখবেন আপনি যখন কাউকে সহায়তা করেন, তারাও সম্ভবত আপনাকে সহায়তা করার একটি উপায় খুঁজে। এটি আজ বা কাল হতে পারে। তবে ভবিষ্যতে কোথাও কোথাও আপনার যখন প্রয়োজন হবে তখন তারা আপনাকে সহায়তা করবে। অন্যকে সহায়তা করাও আপনার চারপাশে একটি অনুগত এবং সহায়ক নেটওয়ার্ক তৈরির এক দুর্দান্ত উপায়। সফল উদ্যোক্তারা তাদের দেখা লোকদের সহায়তা করে।

By Moksedul Islam

I am Moksedul Islam. Writer, poet and storyteller. An entrepreneur. Love to write and read. Writing is my hobby.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *