দিন-দুনিয়ায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। না! কথাটি কিন্তু শুধু আমার নয়। প্রায় সবাই বিশেষ করে মুরুব্বীরা এই কথাটি প্রায়ই বলে থাকেন। তো এই পরিবর্তনের হাওয়ায় কিন্তু আপনার গাঁয়েও লাগাতে হবে। কথা বলবো, অল্প টাকায় শহরে কি ব্যবসা করে আপনি লাভবান হতে পারেন। তো চলুন মূল আলোচনায় যাই।

ব্যবসা করার ইচ্ছে কম/বেশি সবারই আছে। তবে টাকার অভাবে ইচ্ছেটি অনেকেরই সুপ্ত থাকে এবং সুপ্ত থাকতে থাকতেই একসময় মরে যায়। কিন্তু অল্প টাকাও আপনি শহরে ব্যবসা করতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন আপনার ইচ্ছে শত্কি ও গাইডলাইন।

১। ফ্লেক্সিলোডঃ খুব জনপ্রিয় একটা ব্যবসা। এরজন্য একটা বাটন মোবাইল-ই যথেষ্ট। অল্প পুজিতে এই ব্যবসাটি করে দেখতে পারেন। ফ্লেক্সিলোড/ইজিলোড/টপআপ যে নামেই বলি না কেন মূল উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই তা হলো সিমে টাকা রিচার্জ করা। প্রতি এক হাজার টাকায় আপনি কমিশন পাবেন ত্রিশ টাকা। ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করার জন্য আপনার বড়সর জায়গারও দরকার নেই। ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা পরিচালনার করার জন্য আপনাকে জনসমাগম বেশি এরকম স্থান নির্ধারণ করতে হবে। যদি আপনি মার্কেট পর্যায়ে ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা করতে চান, তবে মার্কেটের সামনের অংশে দোকান নেয়ার চেষ্টা করবেন। আর মহল্লা/এলাকা হলে জনসমাগমপূর্ণ স্থান, যে স্থানে সকালে ও বিকেলের সময় বেশি সময় মানুষ অতিবাহিত করে ঐরকম স্থান নির্ধারণ করুন।

২। ক্যাটারিং সেবাঃ মানুষের রুচি ও কালচারে বত্যমানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। অফিস/আদালতের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিবাহ ও স্কুল-কলেজের অনুষ্ঠানে অনেকেই ক্যাটারিং সেবা নিচ্ছে। আর এই সেবার পরিধিও কিন্তু দিন দিন বাড়ছেই।  যাদের পূঁজির পরিমাণটা একটু বেশি অর্থাৎ দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করার সামর্থ্য রাখেন তারা ছোট আকারে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

৩। ফুড প্রসেসিংঃ দিন যতো যাচ্ছে প্রসেসকৃত খাবারের চাহিদা ততোই বাড়ছে। খুব অল্প টাকা দিয়ে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। বিভিন্ন আইটেমের আচাড়, জুস, বেকারী আইটেম, দুগ্ধজাত খাবার, শুটকী ইত্যাদি মান সম্পন্ন পণ্য তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। কিভাবে ফুড প্রসেস করতে হয় সে সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অজর্ন করে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ট্রেনিং নিতে পারেন। ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন।

৪। হস্ত শিল্পঃ যারা হস্তশিল্পে দক্ষ তাদেরকে কাজে লাগিয়ে খুব কম খরচে বিভিন্ন আকর্ষণীয় পণ্য তৈরি করে শহরে বিক্রি করা যেতে পারে। শহর এলাকায় হস্ত শিল্পের চাহিদা প্রচুর। তবে এ ব্যবসায় প্রথম দিকে দরকার ধৈর্য্য, ইচ্ছা আর কঠোর পরিশ্রম। তবে একবার সফলতার মুখ দেখলে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না।

৫। অর্গানিক পণ্য বিক্রিঃ স্বাস্থ্যসচেতন উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মানুষগুলো তাদের দৈনন্দিন বাজারের প্রতিটি পণ্যই অর্গানিক কেনার চেষ্টা করছেন। তারা দিন দিন এখন অর্গানিক পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন। এই তালিকায় আছে   হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, প্রাকৃতিক মধু, ঘি, নলেন ও পাটালিসহ খেজুরের গুড় । নদী-খাল-বিলের মাছ ও গৃহস্থবাড়ির পোষা হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের মাংসসহ বিভিন্ন খাদ্য উপাদান। এই ব্যবসাকে একবার সফল করতে পারলে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না।

যাদের ব্যবসা করার জন্য পুজি একদমই কম মানে দশ/বিশ হাজারে নিচে তারা ফুটপাতে জুস বিক্রি করতে পারেন। বাদাম বা ঝালমুড়ি বিক্রির ব্যবসা করতে পারেন। বিভিন্ন মার্কেট/শপিংমল এবং সরকারী অফিসগুলো খাবার সাপ্লাইিএর ব্যাবসা করতে পারেন। কিংবা একটা ভ্যান ভাড়া নিয়ে সেটাতে সবজি বিক্রি করতে পারেন। ফুটপাতে টি-শার্ট, ছোটদের জামা-প্যান্ট বিক্রি করতে পারেন।

আপনার যদি কম্পিউটার চালানোর দক্ষতা থাকে তবে  নিজে দোকান দিয়ে বা কোন দোকানের সাথে যোগাযোগ করে সেখানে আপনার কম্পিউটার নিয়ে বসুন। মানুষের ব্যাসিক কিছু কাজ করে দিন। যেমনঃ চাকরির আবেদন, পরীক্ষার ফলাফল দেখা, বিভিন্ন টাইপিং এর কাজ, ইত্যাদি। এ থেকে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

By Moksedul Islam

I am Moksedul Islam. Writer, poet and storyteller. An entrepreneur. Love to write and read. Writing is my hobby.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *