কোন কিছুতে পরিবর্তন আনা কিংবা পরিবর্তন করা কিন্তু খুব কঠিন কাজ। আবার কারো কারো কাছে এটা পানির মতো সহজ। জীবনে প্রত্যেকের লক্ষ্য থাকে সফল হওয়ার। তবে জীবনে সফল হতে হলে প্রয়োজন জীবনটাকে বদলানো। কিভাবে নিজের জীবনে পরিবর্তন আনবেন কখনোও কি চিন্তা করেছেন? ভেবে দেখেছেন কি করতে হবে এর জন্য? না জানলে চলুন জেনে আসি যে সাতটি উপায়ে বদলে ফেলবেন নিজের জীবন।
নিজের জীবনে পরিবর্তন আনতে হলে সবার আগে প্রয়োজন নিজের একটা আইডিয়া এবং কাজের পরিকল্পনা। জীবন, জীবনের লক্ষ, কাজ ইত্যাদি সম্পর্কে একটা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করুন।
নিজের আইডিয়া ও কাজের পরিকল্পনাগুলোকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করে কিন্তু আমরা আমাদের জীবনটাকে পরিবর্তন করা করতে পারি। এ জন্য জীবনের লক্ষ্য, ভবিষ্যতের ভাবনা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কিছু পদ্ধতি নিয়ে আজকে আলোচনা করা করবো।
এখানে এমন সাতটি পরিকল্পনা নিয়ে আজকে কথা বলব যা মেনে চলতে পারলে আপনার জীবন সত্যিই পাল্টে যাবে।
১) অর্থ সঞ্চয় করুনঃ নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য এটা হলো আপনার প্রথম পদক্ষেপ। দেখুন বর্তমান সময়ে অর্থ ছাড়া কিন্তু জীবন বৃথা। তাই নিজে কিভাবে অর্থ সঞ্চয় করবেন সেই বিষয়ে আপনাকে ভাবতে হবে। তার মানে হলো অর্থ ইনকামের পাশাপাশি কোথায় গেলে আপনার জন্য অর্থ সাশ্রয় হবে সেটিও আপনার জানা থাকা উচিৎ। ধরুন, আপনি আজকে শপিংয়ে যাবেন, শপিংয়ে যাওয়ার আগেই বাসায় বসে লিখে ফেলুন কি কি কিনবেন। তারপর দেখুন কোন মার্কেটে গেলে আপনার জন্য সাশ্রয়ী হবে। কারণ সব মার্কেটে কিন্তু সব পণ্যের দাম সমান না। আর এই পরিকল্পনা আপনাকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় থেকে রক্ষা করবে।
২) কাজ করার আগে চিন্তা করুনঃ নিজের করণীয় সম্পর্কে প্রথমে ভালো করে চিন্তা করুন। কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না তার একটি তালিকা করে নিন। হুটহাট করে কিন্তু কোনকিছু লিখে ফেলা যাবে না। আপনার চিন্তাগুলোকে একটা কাঠামোতে সাজিয়ে ফেলুন। সব লেখা হয়ে গেলে তার পর দেখুন কোন কাজটিকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। কোন কাজটি কোন সময়ে করলে ভালো ফল আসবে সেটা খেয়াল করুন। এভাবে চিন্তা করে, তালিকা ধরে ধরে এগুতে থাকুন।
এতে করে আপনি যাই করবেন তাতে একটি মানসিক সন্তুষ্টি থাকবে আপনার। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেন আমরা একই সময়ে আমাদের মাথায় চারটি বিষয়কে রাখতে পারি।
৩) নিজেকে আরও সফল করে তুলুনঃ এইযে তালিকাটি করলেন এই তালিকাটিই কিন্তু দিনশেষে আক্ষরিক অর্থেই আপনাকে সফল করে তুলতে পারে এবং এটিই হতে পারে বেশি কার্যকর। নিজেকে কি করে আরও সফল করে তুলবেন সেই লক্ষ্যগুলো আপনি লিখতে শুরু করুন। তাই আজই একটি কলম হাতে তুলে নিন, সাথে এক টুকরো কাগজ।
৪) আপনি কোন ভুল করছেন না এই বিষয়টি নিশ্চিত করুনঃ মানুষই ভুল করে। কাজে ভুল হতেই পারে। কিন্তু সেটা কতবার? কতো দিন? আপনি যে কোন কাজেই করেন না কেন, “কাজে ভুল হচ্ছে না” এই বিষয়টি নিশ্চিত করুন। এটি আপনাকে সম্ভাব্য কোনো বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবে। কেনাকাটার পরিকল্পনা, বিয়ের পরিকল্পনা, ছুটিতে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা বিবিধ বিষয়ে একটি চেক লিস্ট তৈরি করুন। এই চেক লিস্ট কিন্তু খুবই জরুরী। লিখে ফেলুন কি কি দরকার তাও। শেষে দেখবেন একটা দারুণ পরিকল্পনা হয়ে যাচ্ছে।
৫) আত্মবিশ্বাসকে জাগ্রত করুনঃ যাওয়া – আসার মধ্যে দিয়েই মানুষের জীবন। ভাবুন তো একবার, কতটা বছর পেরিয়ে এতদূর পর্যন্ত এসেছেন আপনি? এর মধ্যে কি আপনার কোন অর্জন নেই? অবশ্যই আছে।
আবার অনেক কিছুই কিন্তু জীবন থেকে হারিয়েও গেছে। কিংবা এমনও তো মনে হতে পারে, আপনি এখন যে জীবন পার করছেন তা যথেষ্ট ভালো নয় আপনার জন্য। আপনার এমন জীবন চাওয়ার ছিল না।
আপনি আপনার ছোট-বড় সব অর্জন লিখে লিখে তালিকা করে ফেলুন। আপনার ডায়রি, খাতায় লিখে ফেলুন আপনার যত অর্জন। তাহলে দেখবেন এর মধ্যে দিয়েও সত্যিই কী দারুণ সময় গেছে আপনার। আর এতে করে আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাবে।
৬) সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় নিজেকে স্থির করুনঃ এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিশ্রাম। পর্যাপ্ত ঘুম। উত্তেজিত না হয়ে যে কোন কাজ ঠান্ডা মাথায় করার চেষ্টা করুন। কারণ আমাদের মস্তিষ্ক অনেক সময় মনে করিয়ে দেয় যে কোন কাজগুলো শুরু করেও আমরা শেষ করিনি।
মাঝেমধ্যে এমনও হতে পারে একটি কাজ করতে গিয়ে তার মধ্যে আর একটি কাজ ঢুকে পড়ে এবং আপনার নির্দিষ্ট কাজটির ব্যাঘাত ঘটায়। তাই কোনটা আগে করবেন তা লিখে ফেলুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন।
৭) সাহস করে এগিয়ে যানঃ বেঁচে থাকার অধিকার সাহসী মানুষদের। যেসব বিষয় আপনাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দিচ্ছে কিংবা আপনাকে দমিয়ে রাখছে সেগুলোর মুখোমুখি হোন। মনে রাখবেন বিষয়টি হয়তো আপনার জন্য সুখকর নাও হতে পারে। তারপরেও ভয় না পেয়ে, দমে না গিয়ে মোকাবেলা করুন। দেখবেন দিনশেষে সফলতা আসবেই।