চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং সৌর জগতের পঞ্চম বৃহত্তম উপগ্রহ। পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চাঁদের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব হচ্ছে ৩৮৪,৪০০ কিলোমিটার (প্রায় ২৩৮,৮৫৫ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৩০ গুণ। এর অর্থ দাড়াচ্ছে, চাঁদের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ৫০ ভাগের ১ ভাগ। এই চাঁদ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। পৃথিবীর এই উপগ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীরা আজও গবেষণায় ব্যস্ত, চলছে নানা অভিযানও। চলছে বিস্তর গবেষণা। তবুও বাকি রয়েছে এখনও অনেক রহস্য। সবশেষ চাঁদে মানুষের বসতি স্থাপন নিয়েও চলছে গবেষণা।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু এক অজানা রহস্যঘেরা স্থান। চাঁদের এই অংশ নিয়ে এখনো অনেক কিছু অজানাই রয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে কিছু নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এল চীনের নভোযান চ্যাংই–৬।
গত ৩ মে চীনের হাইনান প্রদেশ থেকে চ্যাংই–৬ চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করে। এর ঠিক এক মাস পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে নভোযানটি।
২৫ জুন বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, চাঁদের দূরতম অঞ্চল দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছে তাদের চন্দ্রযান। এটি মঙ্গোলিয়ায় অবতরণ করেছে। এর আগে চীনের মহাকাশ বিষয়ক সংস্থা আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘মূল্যবান উপহার নিয়ে ২৫ জুন পৃথিবীতে ফিরে এসেছে চ্যাংই–৬।’
চীনা বিজ্ঞানীদের দাবি, চাঁদ থেকে আনা নমুনার মধ্যে থাকতে পারে ২৫ লাখ বছর পুরোনো এক আগ্নেয় শিলা। পাশাপাশি, তারা আরেকটি বস্তু পাওয়ার আশা করছেন, যার মাধ্যমে চাঁদের দুই দিকে ভৌগলিক পার্থক্য নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
চাঁদের কাছের পৃষ্ঠ, যা সব সময় পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে, তা তুলনামূলক সমতল ও এর মধ্যে আঘাত থেকে তৈরি গর্তের সংখ্যাও কম। আর চাঁদের দূরবর্তী পাশ সবসময় পৃথিবীর বিপরীত দিকে মুখ করে থাকে।
নভোযানটি অবতরণ করার পর চীনের জাতীয় মহাকাশ সংস্থার প্রধান ঝ্যাং কেজিয়ান এ মিশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘোষণা দেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, মিশনটি সফলভাবে শেষ করা চীনের মহাকাশ ও বৈজ্ঞানিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যমাত্রার জন্য ‘যুগান্তকারী অর্জন’।
বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনা ছিল, দুই কেজি নমুনা পৃথিবীতে আনা হবে; কিন্তু কী পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদ থেকে সংগ্রহ করা এই নমুনা নতুন খনিজের সন্ধান দিতে পারে। এমনকি চাঁদের ভূতাত্ত্বিক প্রকৃত বয়সও জানা যাবে।